একজন শিক্ষক ও অভিভাবক হিসেবে আমি সত্যিই বাকরুদ্ধ। আমি চিন্তিত যে, সমাজ কোথায় যাচ্ছে? এর পেছনে ধর্মীয় ও নৈতিক শিক্ষার অভাব গুরুতরভাবে দায়ী।
আগে জানতে হবে, মানুষের অপরাধ প্রবণতা রোধ হয় কিসে? একজন পিতা বা সন্তান ঘরোয়া জীবনে এমন অনেক সুযোগ পায় যখন খুব সহজেই খুনের মতো অপরাধ ঘটাতে পারে। কিন্তু সব সুযোগ থাকার পরও মানুষ অপরাধ থেকে বিরত থাকে আল্লাহভীতি ও মনুষ্যত্ববোধের কারণে।
আর আল্লাহভীতি ও মনুষ্যত্ববোধ তৈরি হয় ধর্মীয় ও নৈতিক শিক্ষার মাধ্যমে, পারিবা রিক ও সামাজিক অনুশাসনের মাধ্যমে।
আর এজন্য আমরা ধর্মীয় শিক্ষা ও নৈতিক মূল্যবোধের চর্চা নিশ্চিত করতে বলি। কারণ, তা মানুষকে আদর্শ মানুষ, আদর্শ সন্তান, আদর্শ নাগরিক হতে সাহায্য করে, পরিবার-আত্মীয়স্বজন-প্রতিবেশী ও সমাজের সবার প্রতি সদ্ব্যবহারের শিক্ষা দেয়। যেমন ইসলাম বলে সবার প্রতি মানুষের নৈতিক দায় আছে।
বিপরীতে বস্তুবাদী ও পশ্চিমা শিক্ষা কিন্তু মানুষকে দায়মুক্ত বন্ধনহীন জীবনের শিক্ষা দেয়। মূলত পশ্চিমা জীবন ব্যবস্থায় আবেগ, অনুভূতি, মানবিক মূল্যবোধ, পরিবার ও সমাজের প্রতি দায়বদ্ধতা মূল্যহীন। আত্মকেন্দ্রীকতাই এর মূলকথা, মূলভিত্তি।
বর্তমান শিক্ষা কারিকুলামে প্রয়োজনীয় দ্বীনি শিক্ষার যথেষ্ট অভাব আছে। বিশেষ করে বিগত সরকারের সময় যে শিক্ষানীতি গ্রহণ করেছিল তা ধর্মীয় ও নৈতিক মারাত্মকভাবে দুর্বল ও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। আমি মনে করি, একটি স্তর পর্যন্ত ধর্মশিক্ষা বাধ্যতামূলক করা প্রয়োজন। ধর্মশিক্ষার পাঠ্যপুস্তকগুলোও পুনমূল্যায়ন করা প্রয়োজন। নতুবা একটি প্রজন্মই নষ্ট হয়ে যাবে।
আর তরুণ প্রজন্মকে রক্ষা করতে হলে তথ্য-প্রযুক্তির ব্যবহার সুনিয়নি্ত্রত হওয়া দরকার। এই ক্ষেত্রে সরকারেরও উচিত একটি নীতিমালা তৈরি করা। প্রযুক্তি ব্যবহারে বাস্তবসম্মত গাইড লাইনও তৈরি করা দরকার। আর সেটা জাতীয় পর্যায়েই হওয়া দরকার।
—মাওলানা বাহাউদ্দীন যাকারিয়া
যুগ্ম মহাসচিব, জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশ
মহাপরিচালক, জামিয়া হুসাইনিয়া আরজাবাদ, ঢাকা
সহ-সভাপতি, বেফাকুল মাদারিসিল আরাবিয়্যা বাংলাদেশ
নায়বে আমীর, হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ