প্রতিটি সংগঠনের বৃক্ষ তার শেকড়ের উপর দাঁড়িয়ে থাকে। প্রতিটি সন্তান তাঁর বাবার পরিচয়ে পরিচিত হয়। এদেশে হাজারো সংগঠন আছে, আজ থেকে ২০ বছর ৩০ বছর বা ৫০ বছর আগের ইতিহাসে তাদের নাম পাওয়া যায় না। জমিয়তের শিকড় এত গভীরে, আজ থেকে ১০০ বছর আগের ইতিহাস ঘাটলেও জমিয়তের নাম স্বর্ণাক্ষরে লিখিত পাওয়া যায়। ইংরেজ আমল থেকে শুরু করে ২৪ এর গণঅভ্যুত্থান পর্যন্ত সংগ্রামের বিভিন্ন ধারায় সামনের সারিতে নেতৃত্ব দিয়েছে জমিয়ত ও তার অঙ্গ সংগঠনগুলো। অতএব, জমিয়ত পিতৃপরিচয়হীন সংগঠন নয়। জমিয়তের শেকড় অনেক গভীরে।
জমিয়তে উলামায়ে হিন্দের তৎকালীন কায়েদ হুসাইন আহমদ মাদানীর ইংরেজ বিরোধী সংগ্রাম ও তার প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ অবদানে ভারত উপমহাদেশের স্বাধীনতা অর্জিত হয়েছে। একাত্তরের সময় পশ্চিম পাকিস্তান জমিয়ত উলামায়ে ইসলামের সভাপতি মাওলানা মাহমুদুল হাসান পশ্চিম পাকিস্তানি হয়েও বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামে অনন্য ভূমিকা রেখেছেন। একই সাথে মুক্তিযুদ্ধের প্রত্যক্ষভাবে অংশগ্রহণ করে ও মুক্তিযোদ্ধাদেরকে মদদ দিয়ে তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের নেতৃবৃন্দ মহান মুক্তিযুদ্ধের প্রতি সংহতি জ্ঞাপন করেছেন। জুলাইয়ের স্বাধীনতার সংগ্রামেও জমিয়ত ও তার অঙ্গ সংগঠনগুলো সংহতি জ্ঞাপন করে ছাত্র-জনতার পাশে দাঁড়িয়েছে। অতএব এদেশের রাজনীতিতে জমিয়তকে বিয়োগ করার কোন সুযোগ নেই।
পরিশেষে তিনি ছাত্র জমিয়তের কর্মীদের উদ্দেশ্যে বলেন, ছাত্ররা আগামীর বাংলাদেশের নেতৃত্ব দিবে। জুলাইয়ে মহান অভ্যুত্থান ঘটিয়ে যেই ছাত্ররা ফ্যাসিস্টের চেয়ারকে শুদ্ধশেকড় উপড়ে ফেলেছে, এই ছাত্রদের দ্বারা যেকোন কিছুই সম্ভব। অতএব, এই সংগ্রামী ছাত্রদেরকে যোগ্য নেতা হিসেবে গড়ে তুলতে ছাত্র জমিয়তের অক্লান্ত মেহনত প্রয়োজন।
আজ ১৬ মে ২০২৫, শুক্রবার সকাল ১০ ঘটিকা হতে আলহাজ আব্দুল লতিফ দারুল উলূম মাদ্রাসা মিলনায়তনে ছাত্র জমিয়ত বাংলাদেশ ফতুল্লা থানা শাখার উদ্যোগে ছাত্রনেতা ইকরাম হুসাইনের সভাপতিত্বে একটি ‘তরবিয়তী জলসা’ অনুষ্ঠিত হয়। উক্ত তরবিয়তী জলসায় উপরোক্ত বক্তব্য রাখেন প্রধান অতিথি নারায়ণগঞ্জ জেলা জমিয়তের সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা ফেরদাউসুর রহমান।
উক্ত জলসায় গুরুত্বপূর্ণ প্রশিক্ষণমূলক ও তরবিয়তী আলোচনা করেন মুফতি নূরুল আলম ইসহাকী ও মাওলানা বিনইয়ামিন প্রমুখ। এছাড়াও উক্ত জলসায় বক্তব্য রাখেন নারায়ণগঞ্জ জেলা জমিয়তের প্রচার সম্পাদক ও ফতুল্লা থানা জমিয়তের দায়িত্বশীল মাওলানা তাজুল ইসলাম আব্বাস ও ছাত্র জমিয়ত বাংলাদেশ নারায়ণগঞ্জ জেলা’র আহবায়ক আবুল হাসানাত মেহরাব।